শিক্ষক দিবসে এক ইমামের সম্মানজনক বিদায়

 


চাঁদপুরের মতলব উত্তরের শিকারীকান্দি বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল খালেককে এলাকাবাসী রাজকীয় আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিদায় জানিয়েছে। টানা ৪৪ বছর ইমামতি করার পর মুসল্লিদের এমন ভালোবাসা ও সংবর্ধনায় মুগ্ধ হয়ে আবেগে কেঁদে ফেলেন তিনি। মতলব উত্তরে এমন রাজকীয়ভাবে কোনো ইমামকে বিদায় দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম বলে জানান স্থানীয়রা।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে দূর্গাপুর ইউনিয়নের শিকারীকান্দি গ্রামে ইমাম সাহেবকে বিদায় জানানোর নানা আয়োজন চলে। ঘোড়ার গাড়ি রঙবেরঙের ফুল ও বেলুন দিয়ে সাজানো হয়। উপস্থিত মুসল্লিদের জন্য উপাদেয় খাবারের আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনা শেষে ইমাম মাওলানা আব্দুল খালেককে ঘোড়ার গাড়িতে উঠিয়ে এলাকাবাসী তাকে সম্মানজনক বিদায় জানায়।

ঘোড়ার গাড়িতে ওঠার আগে ইমাম সাহেব মুসল্লিদের কাছে নিজের ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চান। পরে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা সহকারে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে তাকে তার নিজ গ্রাম কচুয়ার ইমামবাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর আগে সকালে মসজিদের পক্ষ থেকে তাকে নগদ অর্থ উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।

মাওলানা আব্দুল খালেক বলেন, ‘১৯৮০ সাল থেকে এই মসজিদে ইমামতি করছি। এত বছর পর বিদায় বেলায় এলাকাবাসীর এই ভালোবাসা ও সম্মান আমাকে অভিভূত করেছে।’ তিনি প্রত্যাশা করেন, এমন সম্মানজনক বিদায় প্রতিটি মসজিদের ইমামের ক্ষেত্রেও হওয়া উচিত।


মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. সেলিম জানান, মতলব উত্তরে এই প্রথম একজন ইমামকে এমন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। মসজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ আমাদের জন্য বেদনাদায়ক দিন, কারণ আমরা আমাদের আত্মার আত্মীয়কে বিদায় জানাচ্ছি, যিনি দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে আমাদের দ্বীনি শিক্ষায় আলোকিত করেছেন। মুসল্লিদের অনেকের চোখে অশ্রু দেখা গেছে।’

মাওলানা আব্দুল খালেক কচুয়া উপজেলার সাচার এলাকার বাসিন্দা। মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি তিনি লবাইরকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় শিক্ষকতা করতেন। শিক্ষক দিবস উপলক্ষে এলাকাবাসী তাকে সম্মান জানিয়ে বিদায় দেয়, কারণ একসময় তিনি এই এলাকায় শিক্ষকতাও করতেন।

Post a Comment

0 Comments